Table of Contents
Easy Candle Making Business in Bengali মোমবাতি তৈরির ব্যবসা
মোমবাতি তৈরির ব্যবসা (Candle Making Business in Bengali). এমন এক ব্যবসা যেটাতে অধিক পরিমাণে উপার্জন করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে । সামান্য পুঁজি নিয়েই ব্যবসাটি শুরু করা যাবে । আর এর চাহিদা কখনোই কম হয়না । কাজেই সারাবছর ব্যবসা রমরমিয়ে চলবে ।
আজকাল সৌখিন মানুষেরা ঘর সাজানোর উপকরণ হিসেবে মোমবাতিকে শোপিস রূপেও ব্যবহার করে থাকেন । এই ব্যবসার মাধ্যমে কোন উদ্যোক্তা তার সকল প্রকার অর্থের চাহিদা পূরণ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে উপার্জন করতে পারবে । জীবনকে স্বচ্ছল করে তুলতে পারবে । আসুন, আজ আমরা আলোচনা করি, (Candle Making Business in Bengali) অর্থাৎ মোমবাতি তৈরির ব্যবসা কি ভাবে শুরু করা যাবে, তা নিয়ে । কি ভাবে তার উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ঘটাতে হবে সেই বিষয়েও ধাপে ধাপে আজ আলোচনা করবোঃ
মোমবাতি তৈরি (Candle Making Business) ব্যবসার সম্ভাবনা
মোমবাতি বর্তমানে বিপুল ব্যবহৃত একটি পন্য । একটু স্টাডি করলেই বিপুল সম্ভাবনা আপনি নিজেই দেখতে পারবেনঃ
১) সব ধর্মের মানুষকেই এটা ব্যবহার করতে হয় । হিন্দুদের দৈনিক পূজা পাঠ থেকে শুরু করে যেকোনো মন্দির ও তীর্থস্থানে, মুসলিমদের শরীফ মাজার, খ্রিস্টানদের চার্চ বুরিয়ালে যথেষ্ট পরিমানে মোমবাতির ব্যবহার হয়ে থাকে ।
২) যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন বার্থডে, শ্রাদ্ধ, অন্নপ্রাশনের মতো কাজে মোমবাতির দরকার হয়ে থাকে ।
৩) কোনও প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠানে বা প্রতিবাদ সভায়ও মোমবাতির ব্যবহার হয়ে থাকে । সারাবছরই এর সমান চাহিদা থাকে ।
৪) মোমবাতির কোনও অফ সিজিন বলে কথা হয় না (Candle Making Business) । অনায়াসে উদ্যোগকারী বিপুল মুনাফা অর্জন করতে পারবে সন্দেহ নেই ।
মোমবাতি তৈরি ব্যবসার পরিকল্পনা
কোনও ব্যবসা শুরু করার আগে তার সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সর্বপ্রথম জোগাড় করে আপনাকে একটি সুন্দর পরিকল্পনা গঠন করতে হবে । Candle Making Business সাফল্য লাভের ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা অত্যন্ত জরুরীঃ
১) আপনি ব্যবসা ছোট না বড় আকারে করতে চান, সে বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নিন । আমরা বলি, আপনি বড় করে করতে চাইলেও প্রথমে ছোট করে শুরু করুন । তারপর ব্যবসাটি শিখে গেলে, বেশি পুঁজি নিয়ে বড় আকারে করতে পারবেন ।
২) ব্যবসাটি কোথায় শুরু করতে চান, সেটাও ঠিক করুন । প্রথমে বাড়ি থেকে শুরু করাটাই ভালো । ভাড়াতে ঘর নিয়ে শুরু করা যেতে পারে, কিন্তু খরচের চাপ থেকে যায় । শুরুতে সেই চাপ না নেওয়াটাই ভালো দিক ।
৩) এই ব্যবসা (Candle Making Business) নিজে নিজেই করা যায় । যদি লেবার নিয়ে শুরু করতে চান, তাহলে দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য লেবার খুঁজে বের করুন ।
৪) কাঁচামাল কি কি লাগবে এবং কোথায় থেকে তা পাওয়া যাবে তার জন্য বিস্তারিত খোঁজ খবর নিন । লোকাল মার্কেট অথবা বিভিন্ন ইকমার্স সাইট যেমন অ্যামাজন, ইন্ডিয়ামার্ট ইত্যাদি জায়গায়ও খোঁজ নিতে পারেন ।
৫) প্রতি ব্যবসার (Candle Making Business) জন্য কিছু সরকারী কাগজপত্র লাগে । কি কি কাগজ লাগবে সে বিষয়ে জেনে নিন, সেগুলো কোথা থেকে কিভাবে পাওয়া যাবে সেটাও জেনে ধীরে ধীরে মনস্থির করে লেগে পরুন । আপনার জয় নিশ্চিত ।
মোমবাতি তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি
মোমবাতি তৈরির প্রয়োজনীয় কাঁচামাল
যেকোনো উৎপাদন করতে গেলে কাঁচামালের প্রয়োজন । মোমবাতি বানাতে (Candle Making Business) গেলে যে সমস্ত সামগ্রী প্রয়োজন হয় সেগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
১) কাঁচা মোম বা ওয়াক্স
২) মোম গলানোর পাত্র
৩) মোমবাতির জন্য সুতো
৪) নানা ধরনের রঙ
৫) সুগন্ধি বা ফ্র্যাগরেন্স
৬) ক্যাস্টর অয়েল
কাঁচামাল কেনার সময় আপনাকে মনে রাখতে হবেঃ
১) লোকাল মার্কেট থেকে আপনি সব কিছুই নিতে পারেন । তবে পাইকারি বিক্রেতার কাছ থেকেই নেবেন । পাইকারি দরে নিলে আপনার বাজেট মতো বেশি সামগ্রী নিতে পারবেন এবং দামেও অনেক কম পাবেন ।
২) সব সময় কাঁচামাল নেওয়ার সময় তার গুণমান দেখে নেবেন । এমন পাইকারি বিক্রেতা দের অনলাইনের মাধ্যমেও খুঁজতে পারেন ।
মোমবাতি তৈরির প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি
মোমবাতি তৈরির ব্যবসাটি (Candle Making Business) শুরু করার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজনঃ
১) থার্মোমিটার ।
২) বিভিন্ন ধরনের ডাইস ।
৩) প্লাস্টিক প্যাকেটে প্যাকেজিং করতে চাইলে সিলিং মেশিন লাগবে ।
৪) একটি ওভেন ।
মোমবাতি তৈরি ব্যবসার প্রয়োজনীয় জায়গা
মোমবাতি ব্যবসাটির (Candle Making Business) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর জন্য বেশি পরিমাণে জায়গার প্রয়োজন হয়না । আপনি ঘর থেকেও শুরু করতে পারেন অথবা ভাড়াতে 150 থেকে 200 বর্গফুট মাপের একটি ঘর নিয়েও ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন ।
তবে একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনার কাছে মোম গলানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমান জায়গা এবং কাঁচামাল সামগ্রী রাখার জায়গা, তার সাথে সাথে তৈরি হয়ে যাওয়া মোমবাতি গুলিকে স্টোর করে রাখার জন্যও জায়গা প্রয়োজন । এটা অনেকটাই নিরভর করবে আপনার ম্যানেজমেন্টের উপর । উপযুক্তভাবে ঘরটি গুছিয়ে রাখতে আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে ।
মোমবাতি ব্যবসার মোট খরচ
খরচ নির্ভর করবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপর । ইনকাম বেশি চাইলে পুঁজি বেশি লাগাতে হবে সবার জানা । পুঁজিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ-
মোমবাতি ব্যবসার কার্যকরী মূলধন
১) কাঁচা মোম (দামঃ 130-140 টাকা)
২) মোমবাতির জন্য সুতো (দামঃ 50-60 টাকা)
৩) ক্যাস্টর অয়েল (দামঃ 300-350 টাকা)
৪) সুগন্ধি (দামঃ 200-250 টাকা)
৫) নানা ধরনের রঙ (দামঃ 110-120 টাকা)
আপনার পুঁজি কম থাকলে অবশ্যই ছোট করে শুরু করবেন । ছোট স্তরে আপনি 15 থেকে 20 হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন । ব্যবসার উন্নতি দেখে বড় করে করতে চাইলে, সরকারী লোণ নিয়ে করতে পারবেন । সেক্ষেত্রে, কাগজপত্র ধাপে ধাপে তৈরি করে ফেলবেন । তাতে লোণ পেতে সুবিধা হবে ।
মোমবাতি ব্যবসার স্থায়ী মূলধন
১) মোম গলানোর পাত্র (দামঃ 250-300 টাকা)
২) থার্মোমিটার যার দাম 200 টাকার কাছাকাছি ।
৩) একটি ওভেন যার দাম 5000 টাকার আশেপাশে ।
৪) প্লাস্টিক প্যাকেটে প্যাকেজিং করতে চাইলে সিলিং মেশিন লাগবে যার দাম 2000 টাকার মতো ।
৫) বিভিন্ন ধরনের ডাইস যার দাম 2000 – 3000 টাকা করে ।
বড় স্তরে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে চাইলে করতেই পারেন (Candle Making Business plan) । সেক্ষেত্রে, 3 থেকে 3.5 লাখ টাকা নিয়ে শুরু করতে পারেন । তবে আমরা বলবো, শুরুতে বেশি টাকা ইনভেস্ট না করাই ভালো । ছোট আকারে শুরু করে, তার সাথে সাথে ব্যবসাটিকে আগে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধাপে ধাপে বিনিয়োগ করবেন । এতে আপনার পুঁজির নিশ্চয়তা বেশি থাকবে । ব্যবসা সম্পর্কে অভিজ্ঞতাও বেশি হবে ।
মোমবাতি ব্যবসার মোট খরচ
আপনি ব্যবসার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন । এবার আপনার কাজ (Candle Making Business) সেটআপ তৈরি করা । ধাপে ধাপে নিচের কাজগুলি করুনঃ
১) জায়গাটা ঠিক করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে কোথায় কি রাখবেন তার একটা প্ল্যান করে ফেলুন ।
২) গ্যাস কানেকশানের জন্য অ্যাপলাই করে দিন । গ্যাস আসতে কিছু দিন সময় লেগে যায় ।
৩) যে সব কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি লাগবে তার একটা তালিকা তৈরি করুন । (Candle Making Business plan) তালিকা আমরা দিয়ে দিয়েছি । আপনি একটা কাগজে লিখে নিন ।
৪) তালিকা অনুযায়ী সব জিনিসপত্র এক এক করে কিনে ফেলুন ও ঘরে এনে গুছিয়ে রাখুন । দরকারে একজনের হেল্প নিন ।
৫) আপনি আপনার কোম্পানির নাম ও লোগো দিয়ে প্যাকেট অথবা স্টিকার অথবা দুটোই, যেটা আপনার সুবিধা বানিয়ে ফেলুন ।
৬) ট্রেড লাইসেন্স বানিয়ে ফেলুন ।
৭) যে দুজন লেবার নেবেন ভেবেছেন তাদের সাথে কথা বলুন । একটা দিন ঠিক করে শুরু করে দিন আপনার স্বপ্নের ব্যবসা ।
মোমবাতি তৈরির প্রক্রিয়া
মোমবাতি হাত দিয়ে ও মেশিন দিয়ে দুরকম ভাবেই তৈরি করা যায় । এখানে আমরা কেবলমাত্র হাত দিয়ে তৈরি করার কথাই বলবো । কারন, আমাদের লক্ষ্য অল্প পুঁজিতে কি ভাবে ব্যবসাটা শুরু করা যায় । এবার চলুন, দেখা যাক কি ভাবে মোমবাতি তৈরি করা যায়ঃ
১) প্রথমে কাঁচা মোমকে ওভেনের সাহায্যে একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে গরম করতে হবে । 260 ডিগ্রি থেকে 350 ডিগ্রি পর্যন্ত তাপে গলাতে হবে ।
২) গলে যাওয়া মোমে পরিমান মতো রঙ ও সুগন্ধি মেশাতে হবে ।
৩) ডাইসে আগে থেকে সুতো লাগিয়ে রেডি রাখতে হবে ।
৪) তারপর গলে যাওয়া তরল মোমকে ডাইসের মধ্যে আস্তে আস্তে সাবধানে ঢেলে দিতে হবে । তারপর ঠান্ডা হওয়ার জন্য ডাইসটি রেখে দিতে হবে । মোমের সাইজ অনুযায়ী 10 থেকে 40 মিনিটের মধ্যেই ঠাণ্ডা হয়ে মোম রেডি হয়ে যাবে (Candle Making Business plan) ।
৫) ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পর মোমবাতি গুলি ডাইস থেকে খুলে, সাইডের আঁশগুলো ছাড়িয়ে পরিষ্কার করতে হবে ।
৬) সব শেষে মোমগুলো প্যাকেটজাত করে বিক্রির জন্য রেডি করতে হবে । ব্যাস মোম তৈরি কমপ্লিট । এবার শুধু মার্কেটিং ।
মোমবাতি তৈরির ক্ষেত্রে সাবধানতা
মোমবাতি তৈরিতে (Candle Making Business) মোম গলানোর সময় খুব সাবধান থাকতে হবে । কেননা মোম একটি দাহ্য পদার্থ, তাই গলানোর সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে না থাকলে যে কোন সময় আপনার ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগে যেতে পারে । আর সেই জন্য 260 ডিগ্রি থেকে 350 ডিগ্রি তাপমাত্রা আপনাকে মেইনটেইন করতে হবে । তাই দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য, মোম গলানোর সময় সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরী ।
মোমবাতির প্যাকেজিং
মোমবাতি তৈরির (Candle Making Business) সর্বশেষ প্রক্রিয়া হল প্যাকেজিং । প্লাস্টিকের প্যাকেট অথবা কার্ড বক্সের মধ্যে মোমবাতি গুলি ভরা হয় । প্যাকিং অনুসারে এবং রং এর অনুসারে বিভিন্ন ভাবে সাজানো হয় প্যাকেটগুলো ।
১) প্রথমে আপনার কোম্পানির নাম ও লোগো দিয়ে সুন্দর করে কাগজের ও প্লাস্টিকের প্যাকেট তৈরি করুন । মোমবাতির সাইজ অনুযায়ী বিভিন্ন সাইজের প্যাকেট তৈরি করতে হবে ।
২) তারপর মোমবাতি গুলিকে গুনে যে প্যাকেটে যেমন থাকবে তেমন দিয়ে প্যাকেটের মুখ টেপ দিয়ে আটকে দেবেন । প্লাস্টিক প্যাকেট হলে সিলিং মেশিনে সিল করে দেবেন ।
৩) আপনি যদি, আপনার কোম্পানির নামে প্যাকেট বানানোর খরচটিও করতে না চান, সেক্ষেত্রেও উপায় আছে । বাজার থেকে সাদা প্লাস্টিকের প্যাকেট অথবা রেডিমেড মোমের প্যাকেট কিনে নিতে পারেন । তারপর আপনার Candle Making কোম্পানির নাম, ওয়েবসাইট থাকলে তার নাম দিয়ে স্টিকার বানিয়ে বক্সের উপরে সেঁটে দিন । এ ভাবে মার্কেটিংও হবে এবং আপনার কোম্পানির জনপ্রিয়তাও বাড়বে ।
মোমবাতি ব্যবসার লাইসেন্স ও নিবন্ধন
সব ব্যবসারই কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় । কাগজ আপনার ব্যবসার বড় হাতিয়ার । বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে সরকারী সাহায্য পেতে সঠিক কাগজপত্র খুবই জরুরী । আপনি একে একে সব কাগজই বানিয়ে নেবেনঃ
১) স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে নিন । পঞ্চায়েত এলাকায় প্রধান এবং পৌরসভা এলাকায় কাউন্সিলর ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকে । সামান্য চার্জ নেবে কিন্তু এই একটা কাগজ দিয়েই ব্যবসাটা শুরু করতে পারবেন ।
২) ভবিষ্যতে ব্যবসাকে বৃদ্ধি করার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আপনাকে এগোতে হবে । আপনার ব্যবসার নিবন্ধন করাও আবশ্যক । আপনি SSI ইউনিট হিসাবে আপনার (Candle Making Business) নিবন্ধন করতে পারেন । অনলাইনেও এটা করা যাবে ।
৩) অবশ্যই জিএসটি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে । আপনার এলাকায় কোনও ট্যাক্স কনসাল্ট্যান্টের নিকট বানাতে পারবেন ।
৪) আপনার কোম্পানীর নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট আর একটি প্যান নম্বরও তৈরি করেতে হবে ।
মোমবাতি তৈরি ব্যবসার মার্কেটিং
যেকোনো ব্যবসাতে মার্কেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । (Candle Making Business) মার্কেটিং এর উপরেই নির্ভর করবে ব্যবসাটির লাভ ।
পোস্টার বা সাইনবোর্ডের মাধ্যমে
আপি আপনার কোম্পানির নাম দিয়ে সুন্দর আকর্ষণীয় পোস্টার অথবা সাইনবোর্ড তৈরি করে আপনার এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় খাটিয়ে দিয়ে প্রচার করতে পারেন । এর মাধ্যমে বহু মানুষের কাছে আপনার ব্যবসার নাম চলে যাবে এবং আপনার তৈরি করা মোমবাতি সম্পর্কে তারা জানতে পারবে । অবশ্যই তাদের মধ্যে কিছু লোক আপনার গ্রাহক হতেই পারে ।
অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং
যদি আপনার মোমবাতি গুলিকে (Candle) অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে চান, তাহলে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো সাইটগুলোতে নাম রেজিস্ট্রেশন করে মার্কেটিং করতে পারেন । আপনার নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমেও অনলাইনে স্টোর করতে পারেন । সেখানে মোমবাতিগুলোর আকর্ষণীয় ছবি রেখে দিন, তা দেখে গ্রাহক অনলাইনের মাধ্যমে কেনার আগ্রহ পাবেন ।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কেটিং
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া একটি সবচেয়ে শক্তিশালী প্লাটফর্ম । যেখানে যে কোন ব্যবসার প্রচার করা যায় ও ব্যবসার বৃদ্ধি করা যায় । ফেসবুক, হোয়াটসআপের মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট করে ফ্রেন্ড সার্কেল বৃদ্ধি করুন । তারপর আপনার ব্যবসা সম্পর্কে বলুন, পোস্ট দিন, সুন্দর সুন্দর ছবি দিন । ওয়েবসাইট বানিয়ে তার লিঙ্ক শেয়ার করুন । আস্তে আস্তে দেখবেন অনেক গ্রাহক তৈরি হয়ে গেছে ও আপনার ব্যবসার প্রতি আকর্ষন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
ডাইরেক্ট সেলিং
ব্যবসার মূল ভিত্তি হল ডাইরেক্ট সেলিং । এটি একটি চিরাচরিত পদ্ধতি । ডাইরেক্ট সেলিং আপনি কয়েকটি উপায়ে করতে পারেনঃ
১) আপনার এলাকায় বিভিন্ন বাজারে মুদীখানা দোকানে, ষ্টেশনারী দোকানে অথবা দশকর্মার দোকানে ফেস টু ফেস আপনি নিজে সেলিং করতে পারেন ।
২) প্রয়োজনে সেল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে দুজন সেলসম্যান রেখে কমিশন ভিত্তিতে আপনার মোমবাতি বাজারজাত করতে পারেন ।
৩) কোনও মেলা বা প্রদর্শনীতে যোগ দিতে পারেন । সেখানে স্টল দিলে আপনার মোমবাতি সেল হওয়ার পাশাপাশি ভালো প্রচারও পেয়ে যাবে । আপনার ব্যবসার নাম ছড়িয়ে পড়বে । আপনি সফল হবেন নিশ্চিত ।
মোমবাতির চাহিদা যথেষ্ট । কাজেই আপনার ব্যবসা তড়তড় করে এগিয়ে যাবে সন্দেহ নেই। আপনি সাহস করে লেগে পড়ুন ও একটু পরিশ্রমের মানসিকতা রাখুন, দেখবেন উন্নতি আপনার পিছনে ছুটে বেড়াচ্ছে ।
মোমবাতি ব্যবসার ক্ষেত্রে লাভের হিসাব
লাভ ক্ষতির হিসেবটাই যেকোনো ব্যবসার আসল হিসেব । সবাই ব্যবসা করে লাভের জন্য । (Candle Making Business in Bengali) মোমবাতি ব্যবসাতে অন্য ব্যবসার তুলনায় কম ইনভেস্টমেন্টে, বেশি লাভ পাওয়া যায় এটা সত্যি । তাহলে একটু দেখে নেওয়া যাকঃ
১) বাজারে প্রচলিত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম নির্ধারণ করতে হবে । প্রয়োজনে আপনাকে সামান্য কম দামে অর্থাৎ কম লাভ রেখে মোমবাতি বিক্রি করতে হবে । তবে আপনি মার্কেটিং ভালো করতে পারবেন এবং কাস্টমার পাবেন অনেক ।
২) এক মোমবাতি প্রশিক্ষকের কথায়, মোমবাতিতে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ লাভ করা যায় । কথাটা শুনলে কানে লাগে । সত্যি তাই । তিনি উদাহরন দিয়ে বলেছেন, বাজারে যে মোমবাতিটি ৫০ টাকায় বিক্রি হয়, সেটি তৈরি করতে ২২ থেকে ২৩ টাকা খরচ । তাতে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ লাভ চাপিয়ে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা দামে খুব সহজেই বিক্রি করতে পারবেন ।
৩) সুতরাং বলা যায়, এই Candle Making Business লাভের মার্জিন ভালো থাকায়, ছোট স্তর থেকে যদি শুরু করেন তাহলেও প্রতি মাসে আপনি কম করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন নিঃসন্দেহে । এই ব্যবসাতে আপনার উন্নতির জন্য আগাম শুভেচ্ছা রইলো ।
আপনাদের সুবিধার্থে আরও বিশদে জানা বা ট্রেনিং এর জন নিচের নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেনঃ
- সুপার আর্ট, সোনারপুর খিরিশতলা, ফোন- 9002886369/8335815276
- কদমতলা ও রানিহাটি, হাওড়া, ফোন- 9831531370
Frequently Asked Questions
মোমবাতি তৈরির ব্যবসা কতোটা লাভজনক ?
ANS : মোমবাতি তৈরির ব্যবসা খুবই লাভজনক । লাভের মার্জিন বললে, প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ লাভ থাকে, যেটা আপনি অন্য কোনও ব্যবসায় পাবেন না ।
মোমবাতি ব্যবসায় কেমন পুঁজির দরকার ?
ANS : আপনি ভাবতে পারবেন না, খুবই সামান্য পুঁজিতে এই ব্যবসা শুরু করা যায় । মাত্র ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকায় আপনি ভালোভাবে শুরু করতে পারবেন ।
মোমবাতি ব্যবসায় কেমন আয় করা যায় ?
ANS : সামান্য পুঁজি লাগিয়ে আপনি এই ব্যবসায় একটু পরিশ্রমের মানসিকতে রাখলে মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন । তবে সেটা প্রথম দিকে হবে না, যতো দিন যাবে আপনার ব্যবসার উন্নতিও হবে, আপনার আয়ও বাড়তে থাকবে ।
মোমবাতি ব্যবসা শুরু করা কি খুব কঠিন ব্যাপার ?
ANS : একদম কঠিন ব্যাপার নয় । শুধু দরকার আপনার ইচ্ছা ও আগ্রহ, ব্যাস । অতি সহজ ও অল্প পুঁজির একটি ব্যবসা ।
আমি কি মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারবো ?
ANS : অবশ্যই পারবেন । আপনার জন্যই তো এই ব্যবসাটি । এতে কোনও রকেট সাইন্স লাগে না । অত্যন্ত সরল ও সহজ একটি ব্যবসা । আপনি শুধু মনস্থির করুন ও সাহস করে প্রথম স্টেপটি নিন, দেখবেন ব্যবসা শুরু হয়ে গেছে ।
মোমবাতির চাহিদা কেমন ?
ANS : মোমবাতির চাহিদা প্রচুর । আমরা হয়তো সবাই প্রত্যেক ঘরে একটি হলেও মোমবাতি দেখে থাকবো । জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মোমবাতির প্রয়োজন হয়ে থাকে ।
মেশিন কিনে ব্যবসা করা কি ভালো ?
ANS : অবশ্যই ভালো । কিন্তু প্রথম প্রথম বলবো, মেশিন না কিনতে । প্রথমে ব্যবসা বুঝে নিয়ে নিজের উপর ভরসা তৈরি করে তবেই বেশী পুঁজি নিয়োগ করা উচিত ।
মোমবাতি ব্যবসার মূল চাবিকাঠি কি ?
ANS : দেখুন, সব ব্যবসার মূল চাবিকাঠি হল, মার্কেটিং । পন্য উৎপাদন সবাই করতে পারে, কিন্তু মার্কেটিং ঠিকমতো করতে না পারলে, ব্যবসা ডুবে যায় । কাজেই, উপরে উল্লিখিত পদ্ধতিতে ধৈর্য সহকারে মার্কেটিং করলে ব্যবসা দাঁড়াবেই ।
মোমবাতি তৈরির মূল উপাদান কি ?
ANS : মোমবাতি তৈরির মূল উপাদান হল কাঁচা মোম ও সুতো । সঙ্গে কালার ও সুগন্ধি দিলেও হয়, না দিলেও হয় ।
মোমবাতির ব্যবসায় কোনও ট্রেনিং দরকার আছে কি ?
ANS : একদম না । তবে ভালো ভাবে মোমবাতি তৈরি করতে হলে ও গুনগত মান ঠিক রাখতে গেলে কিছু শিক্ষার প্রয়োজন হয় । তাই অল্প কদিনের ছোট্ট ট্রেনিং নিলে ভালো ।
আজ আমরা মোমবাতি তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করলাম । লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে লাইক করবেন, শেয়ার করবেন ও আমাদের ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করবেন । ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও ভালো ভালো ব্যবসার তথ্য পেতে আমাদের পেজে অবশ্যই ভিজিট করবেন । আমাদের তথ্য থেকে সমৃদ্ধ হয়ে ব্যবসা শুরু করুন, নিজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করুন । ধন্যবাদ ।
all the time i used to read smaller content which also clear their motive,
and that is also happening with this article which I am reading here.
অপূর্ব লেখা। আমি অনেক কিছু জানতে পারলাম।