Table of Contents
Hand Wash Making Business হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা
হাত ধোয়ার সাবান বা হ্যান্ডওয়াশের (Hand Wash Making) সঙ্গে আজকের দিনে সবাই পরিচিত। এই দূষণের যুগে কিছু খাওয়ার বা পান করার আগে হাত পরিষ্কার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আমরা সবাই সেটা করেও থাকি। মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে, আবার রোগ জীবাণুর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে । তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বর্তমানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।
তাই আজকাল হ্যান্ডওয়াশের চাহিদা বিপুলভাবে বেড়ে গেছে। কভিড-19 এসে আমাদের মধ্যে খাবার আগে হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাসটা মোটামুটি পাকা করে দিয়ে গেছে। আমরা আজ জেনে গেছি, এক হ্যান্ডওয়াশ আমাদেরকে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। তাই হ্যান্ডওয়াশ ব্যবসার জন্য একটি সম্ভবনাময় উপাদান।
ব্যবসা মানেই বিরাট আকারে পুঁজি নিয়ে নেমে যাওয়া নয় । আমার সাইটে যেসব ব্যবসার আলোচনা হয়ে থাকে, তার বেশীটাই হয় নিম্ন মধ্যবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণির জন্য । তাই, খুব কম খরচে হাত ধোয়ার সাবান তৈরির (Hand Wash Making Business) ব্যবসা কি করে শুরু করা যায় এবং সহজেই সেটি বাজারে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করে জীবনকে স্বচ্ছল ও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায় তা নিয়ে আজ আলোচনা করবো।
আপনার যদি ইনকামের প্রয়োজন থাকে অর্থাৎ আপনি যদি বেকার থাকেন অথবা দ্বিতীয় ইনকামের রাস্তা খুঁজছেন তাহলে আজকের আলোচনা আপনার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করতে পারে ।
হ্যান্ডওয়াশ (Hand Wash Making) তৈরি ব্যবসার সম্ভাবনা
যেকোনো ব্যবসার পরিধি বিচার করা হয়, তার উপভোক্তার পরিসংখ্যানের উপরে। উপভোক্তা যতো বেশী, ব্যবসার প্রসার ততো বেশী । হ্যান্ডওয়াশ নিয়ে পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে-
এখান থেকে কয়েক বছর আগেও হ্যান্ডওয়াশ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে কোনও ধারনা ছিল না । একমাত্র সাবানই ছিল মানুষের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার হাতিয়ার । কিন্তু আজ হ্যান্ডওয়াশ হাত ধোয়ার জায়গাটি সাবানের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে । দিন দিন জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে ।
1. বর্তমান বাজারে হ্যান্ডওয়াশের চাহিদা প্রচুর পরিমানে বেড়ে গেছে। নিশ্চিতরূপে, আজ এই ব্যবসাটি একটা লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। ধীরেধীরে একশো শতাংশ মানুষই হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করা শুরু করবে।
2. উদ্যোক্তার ভরসার জায়গা এটাই যে, এই ব্যবসার বাজার কখনই কমবে না। দিনে দিনে বাড়তে থাকবে, কারণ আজ মানুষ সচেতন হয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সাধারন সাবানের পরিবর্তে হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করতে শিখেছে।
3. আজকাল বাড়িতে হ্যান্ডওয়াশ না থাকাটা একটা প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে । তাহলে বুঝে নিন, হ্যান্ডওয়াশ মানুষের মনে কতোটা জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছে ।
4.. শুধুমাত্র বাড়িতে নয়, অফিস আদালত, স্কুল কলেজ বা যে কোনও কল কারখানায় এর ব্যবহার অনেক বেড়ে গিয়েছে । সাবানের বদলে সবাই এটাই ব্যবহার করে ।
5. এ ছাড়াও, মন্দির মসজিদ বা দোকান বাজারে হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
6. হাসপাতালে, নার্সিং হোমে অথবা কোনও ক্লিনিকে হ্যান্ডওয়াশের ব্যবহার সম্পর্কে কোনও কথা বলার প্রয়োজন হয় না । সেখানে দিন গেলে প্রচুর হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
তাই আপনি যদি ভেবে থাকেন কোনও ব্যবসা শুরু করবেন, তাহলে স্বল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে এই ব্যবসা (Hand Wash Making Business) শুরু করে ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরি ব্যবসার প্রয়োজনীয় জায়গা
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসাটির (Hand Wash Making Business) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর জন্য বেশি পরিমাণে জায়গার প্রয়োজন হয় না। আপনি ঘর থেকেও শুরু করতে পারেন অথবা ভাড়াতে 150 থেকে 200 বর্গফুট মাপের একটি ঘর নিয়েও ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।
তবে একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে যে, আপনার কাছে হ্যান্ডওয়াশের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান জায়গা এবং কাঁচামাল সামগ্রী রাখার জায়গা, তার সাথে সাথে তৈরি হয়ে যাওয়া হ্যান্ডওয়াশ গুলিকে স্টোর করে রাখার জন্যও জায়গা প্রয়োজন। সেইদিকে লক্ষ্য করলে যদি প্রয়োজন হয় ঘরটা একটু বড় নিতে হতে পারে। এটা অনেকটাই নির্ভর করবে আপনার ম্যানেজমেন্টের উপর। উপযুক্তভাবে ঘরটি গুছিয়ে রাখার দিকেও আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারন, ব্যবসায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুছিয়ে রাখাও ব্যবসার একটা অঙ্গ ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরীর কাঁচামালের তালিকা
হ্যান্ডওয়াশ তৈরীর জন্য অনেক ধরনের উপকরণের প্রয়োজন হয়, আপনি আপনার সামর্থ্যমতো কাঁচামালের পরিমাণ নির্ধারণ করে আপনার ব্যবসার(Hand Wash Making) পরিধি নির্ণয় করতে পারেন।
উপকরনের নাম | দাম |
বিশুদ্ধ জল | 20 টাকা/লিটার |
সুগন্ধি | 450 টাকা/কেজি |
রঙ | 400 টাকা/কেজি |
CLPB | 450 টাকা/কেজি |
সোডিয়াম লরাইল সালফেট (SLS) | 450 টাকা/কেজি |
ক্যাডমিয়াম (Cd) | প্রতি কেজি 478 |
লবণ | প্রতি কেজি 10 টাকা |
একটি মিক্সার মেশিন | 3500 টাকা |
একটি হ্যান্ডসিল মেশিন | 1800 টাকা |
গ্লিসারিন | 500 টাকা |
শাইনার পাউডার | 500 টাকা |
জার বা বোতল | 10 টাকা |
ওয়েট মেশিন | 2500 টাকা |
হ্যান্ডওয়াশ তৈরীর ব্যবসায়ীক যন্ত্রপাতি
যেকোনো উৎপাদন মূলক ব্যবসা শুরু করতে বা প্রতিষ্ঠা করতে গেলে মেশিন ও যন্ত্রপাতি অবশ্যই প্রয়োজন সেটা সবার জানা । হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসাটি (Hand Wash Making Business) শুরু করার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন তাদের মধ্যে-
1. একটি হলো মিকচার মেশিন যার দাম 3000-4000 টাকা।
2. সিলিং মেশিন যার দাম 2000 টাকার মতো। যদি প্যাকেজিং ও সিলিং একসঙ্গে করতে চান, তবে তার দাম কয়েক লক্ষ টাকা হবে। মেশিনটি অল্প সময়ে অনেক কাজ করতে সক্ষম। তবে প্রথম অবস্থায় সেটি না করে ছোট করে শুরু করাই ভালো ।
3. একটি ওয়েট মেশিন যার দাম 3000 টাকার আশেপাশে(Hand Wash Making Business) ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রাপ্তি স্থান
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসাটি (Hand Wash Making Business) শুরু করার জন্য যে যে কাঁচামাল প্রয়োজন, সেগুলি আপনি খুব সহজেই লোকাল মার্কেট থেকে পেয়ে যাবেন। এমন কোনও অপ্রচলিত বস্তু কোনটাই নয় । যেমনঃ
1. বিশুদ্ধ জলের প্রয়োজন । তার জন্য যেকোন ওয়াটার প্ল্যান্টের মালিকের সাথে কথা বলে নেবেন। আজকাল, গ্রামেগঞ্জে কিংবা শহরে অনেক ওয়াটার প্ল্যান্ট তৈরি হয়েছে । সেখান থেকে আপনি খুব কম খরচে সহজেই আপনার দরকার মতো জল পেয়ে যাবেন।
2. লবণ প্রয়োজন । লবন জিনিসটা সব বাজারে, সব মুদি দোকানে এমনকি মোড়ে মোড়ে যে দোকান থাকে সেখানেও সহজেই পাওয়া যায়। আপনি যেখানে মুদীখানা পন্য কিনে থাকেন, সেখানেও লবন পেয়ে যাবেন। এক সাথে এক বস্তা লবন কিনে নেবেন ।
3. রং এবং অন্য রাসায়নিক পদার্থ যেমন সিএলপিবি, ক্যাডমিয়াম এবং পারফিউম ইত্যাদি জিনিসগুলি আপনি আপনার এলাকার যে কোন রাসায়নিক পণ্যের দোকানে পেয়ে যাবেন। যদি আপনার প্রয়োজন মতো সামগ্রী না থাকে, সেখানে অর্ডার দিলেই তারা আপনাকে এনে দেবে ।
4. এছাড়াও আপনার লাগবে গ্লিসারিন, সাইনার পাউডার । সেগুলোও লোকাল দোকানে পেয়ে যাবেন । না পেলে অর্ডার দেবেন ।
5. মেশিন পত্র কিছু কিনতে চাইলে সেটা লোকালে পাওয়া না যেতে পারে । তার জন্য কোনও রাজধানী আকারের বড় বাজার যেমন কলকাতা, দিল্লী, ঢাকা এর মতো জায়গায় যোগাযোগ করতে হবে ।
6. এরপর যেটা লাগবে, প্যাকেজিং এর প্যাকেট । সেটা আপনি লোকালের কোনও ছাপাখানা অথবা বড় শহরে গিয়ে যোগাযোগ করলে পেয়ে যাবেন ।
এছাড়াও এই সমস্ত পন্যের জন্য আপনি অনলাইনে সার্চ করে দেখতে পারেন। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট বা অন্য কোনও সাইটে এ সবই পেয়ে যাবেন। আপনাকে একটু সক্রিয় হতে হবে । আসলে ব্যবসায় (Hand Wash Making) সাফল্য পেতে গেলে আপনাকে চারিদিকের পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখতে হবে ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরীর জন্য মোট খরচ
খরচ নির্ভর করবে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপর। ইনকাম বেশি চাইলে পুঁজি বেশি লাগাতে হবে সবার জানা। পুঁজিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ-
1. আপনার পুঁজি কম থাকলে অবশ্যই ছোট করে শুরু করবেন। ছোট স্তরে আপনি 15 থেকে 20 হাজার টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন। ম্যনুয়ালি মিক্সিং, প্যাকেজিং ও ওয়েট করে হ্যান্ডওয়াশ রেডি করে মার্কেটিং করতে পারেন । প্রথমে ছোট অবস্থায় শুরু করবেন ।
ব্যবসার উন্নতি দেখে বড় করে করতে চাইলে, সরকারী লোণ নিয়ে করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে, কাগজপত্র ধাপে ধাপে তৈরি করে ফেলবেন। তাতে লোণ পেতে সুবিধা হবে।
2. বড় স্তরে আপনি এই ব্যবসাটি শুরু করতে চাইলে করতেই পারেন। সেক্ষেত্রে 3 থেকে 4 লাখ টাকা নিয়ে শুরু করতে পারেন। কোনও কাজ আপনাকে হাতে করতে হবে না । সব কাজ মেশিনে হবে এবং তাতে পন্য উৎপাদনও অনেক বেশী হবে । আপনার ব্যবসার পরিধি বেড়ে যাবে । আপনার মুনাফা অনেক বেশী হবে ।
তবে আমরা বলবো, শুরুতে বেশি টাকা ইনভেস্ট না করাই ভালো। ছোট আকারে শুরু করে, ধাপে ধাপে ব্যবসাটি শিখে বুঝে নিয়ে তার সাথে সাথে ব্যবসাটিকে (Hand Wash Making) আগে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধাপে ধাপে বিনিয়োগ করবেন। এতে আপনার পুঁজির নিশ্চয়তা বেশি থাকবে।
প্রতি 5 লিটার হ্যান্ডওয়াশ তৈরির জন্য নির্দেশাবলী
১) প্রথমে 4250 গ্রাম বিশুদ্ধ জল মেপে একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের গামলাতে রেখে দিন।
২) তারপর অন্য একটি পাত্রে 250 গ্রাম SLS অর্থাৎ সোডিয়াম লরাইল সালফেট পরিমাপ করে তার সঙ্গে 50 গ্রাম গ্লিসারিন দিয়ে ভালো করে মিশ্রিত করুন।
৩) হ্যান্ডওয়াশে আপনি আপনার পছন্দের সুগন্ধি যোগ করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে দুই থেকে তিন গ্রাম সুগন্ধি SLS এ যোগ করুন এবং খুব ভালোভাবে মিশ্রিত করুন।
৪) এবার সুগন্ধি মিশ্রিত SLS কে পরিমাপ করা 4250 গ্রাম জলে ঢেলে দিন এবং খুব ভালোভাবে মেশান। মেশানোর জন্য মিক্সার মেশিন ব্যবহার করতে পারেন।
৫) ভালোভাবে মিশ্রণটি তৈরি হওয়ার পর প্রায় কুড়িগ্রাম CLPB এবং কুড়িগ্রাম ক্যাডমিয়াম মিশিয়ে রাখুন।
৬) আপনি যদি মিশ্রনে আপনার পছন্দের রং যোগ করতে চান, এখনই সামান্য রঙ যোগ করে দিন মিশিয়ে দিন। মিশ্রণটি প্রস্তুত করার সময় রং যোগ করা হলে রং টি খুব ভালোভাবে মিশে যায়।
৭) এরপর মিশ্রণটিতে লবণ দিতে হবে, লবণ দেওয়ার প্রধান কারণ হলো মিশ্রণের ঘনত্ব বাড়ানো। কখনই একবারে সব লবণ ঢেলে দেবেন না। অল্প অল্প করে লবণ দিয়ে মেশান আর ঘনত্ব লক্ষ্য করুন। এইভাবে প্রয়োজন অনুযায়ী লবণ মেশান।
৮) হ্যান্ডওয়াশে চকচকি ভাব আনার জন্য 50 গ্রাম সাইনার পাউডার মেশান। মেশানো হয়ে গেলে মিশ্রনটিকে 10 থেকে 12 ঘণ্টা রেখে দিন এবং আপনার হাত ধোয়ার সাবান প্রস্তুত (Hand Wash Making) হয়ে যাবে।
হ্যান্ডওয়াশের প্যাকেজিং
একবার হ্যান্ডওয়াশ (Hand Wash) প্রস্তুত হয়ে গেলে বিক্রির জন্য আপনার একটি আকর্ষণীয় প্যাকেজের দরকার। মনে রাখবেন প্যাকেজিং মার্কেটিং এর একটি শক্তিশালী অস্ত্র । তাই উন্নত ও আকর্ষণীয় হতে হবে, যেমনঃ-
1. প্রথমে আপনার ব্র্যান্ডের (Hand Wash Making) নাম দিয়ে আকর্ষণীয় স্টিকার তৈরি করে নেবেন। অথবা রেডিমেড স্টিকার কলকাতার বড়বাজার থেকে কিনে নিতে পারেন।
2. 100 মিলি, 200 মিলি মাপের বোতল বড়বাজার থেকে কিনে তার গায়ে স্টিকার লাগিয়ে প্যাকেজিং করতে পারেন। বোতলের মাপ 200 মিলির বেশি হওয়ার দরকার নেই।
3. রেডিমেড পাউচ কিনে তার গায়ে স্টিকার লাগিয়ে প্যাকেজিং করতে পারেন। সেক্ষেত্রে 200 মিলি, 500 মিলি ও 1 লিটার পর্যন্ত মাপ করতে পারেন। আপনি চাইলে নিজের ব্র্যান্ডের নামে পাউচ ছাপিয়ে নিতে পারেন।
মনে রাখবেন, আপনার প্যাকেজিং যতো সুন্দর ও আকর্ষণীয় হবে, আপনার ব্যবসার (Hand Wash Making Business) সুনাম ও প্রচার ততো দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকবে। কারণ, একবার যে জিনিস মানুষের মনে জায়গা করে নেয় মানুষ নিজের অজান্তেই তার প্রচার করতে থাকে ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরি ব্যবসার মার্কেটিং
যেকোনো ব্যবসাতে মার্কেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর মার্কেটিং এর উপরেই নির্ভর করবে ব্যবসাটির (Hand Wash Making Business) লাভ।
পোস্টার বা সাইনবোর্ডের মাধ্যমে
আপি আপনার কোম্পানির নাম দিয়ে সুন্দর আকর্ষণীয় পোস্টার অথবা সাইনবোর্ড তৈরি করে আপনার এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় খাটিয়ে দিয়ে প্রচার করতে পারেন। এর মাধ্যমে বহু মানুষের কাছে আপনার ব্যবসার নাম চলে যাবে এবং আপনার তৈরি করা হ্যান্ডওয়াশ (Hand Wash) সম্পর্কে তারা জানতে পারবে। অবশ্যই তাদের মধ্যে কিছু লোক তো আপনার গ্রাহক হতেই পারে।
অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং
যদি আপনার হ্যান্ডওয়াশগুলিকে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করতে চান, তাহলে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টের মতো সাইটগুলোতে নাম রেজিস্ট্রেশন করে মার্কেটিং করতে পারেন। আপনার নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমেও অনলাইনে স্টোর করতে পারেন। সেখানে হ্যান্ডওয়াশগুলোর আকর্ষণীয় ছবি আপলোড করে দিন, তাই দেখে গ্রাহকেরা অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করার আগ্রহ পাবেন।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মার্কেটিং
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি সবচেয়ে শক্তিশালী প্লাটফর্ম। যেখানে যে কোন ব্যবসার প্রচার করা যায়। আপনার ব্যবসার (Hand Wash Making Business) অনলাইন লিংক শেয়ার করে ও গ্রাহকদের আপনার ব্যবসার প্রতি আকর্ষিত করতে পারেন।
ডাইরেক্ট সেলিং
আপনি আপনার এলাকায় বিভিন্ন বাজারে মুদীখানা দোকানে অথবা ষ্টেশনারী দোকানে ফেস টু ফেস সেলিং করতে পারেন। প্রয়োজনে দুজন সেলসম্যান রেখে কমিশন ভিত্তিতে অথবা পাইকারি বিক্রি করতে পারেন।
হ্যান্ডওয়াশের চাহিদা যথেষ্ট। কাজেই আপনার ব্যবসা (Hand Wash Making Business) তড়তড় করে এগিয়ে যাবে সন্দেহ নেই।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও নিবন্ধন
1. স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করে নেবেন। পঞ্চায়েত এলাকায় প্রধান এবং পৌরসভা এলাকায় কাউন্সিলর ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে থাকে।
2. আপনার ব্যবসার নিবন্ধন করাও আবশ্যক। আপনি SSI ইউনিট হিসাবে আপনার ব্যবসার (Hand Wash Making Business) নিবন্ধন করতে পারেন।অনলাইনেও করা যাবে। এতে ভবিষ্যতে আপনার ব্যবসার জন্য সরকারী সাহায্য অথবা যে কোনও সমস্যায় সহযোগিতা পেতে পারেন ।
3. অবশ্যই জিএসটি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার এলাকায় যেকোনো ল ফার্ম বা সিএ ফার্মে গিয়ে যোগাযোগ করলেই আপনার কাজ মিটে যাবে ।
4. কোম্পানীর নামে একটি ব্যাংক একাউন্ট আর একটি প্যান নম্বরও তৈরি করেতে হবে। এগুলো ভবিষ্যতে আপনাকে অনেক বেনিফিট দিয়ে থাকবে ।
5. দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এর ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে। এটি না হলে আপনি ব্যবসার (Hand Wash Making) অনুমতি পাবেন না ।
6. তারপর বিউরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড আপনার কোম্পানীর পণ্য গুলির আইএসআই ট্রেডমার্ক পাওয়ার জন্য আবেদন করুন। এর ফলে মানুষের কাছে আপনার কোম্পানির পণ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
হ্যান্ডওয়াশ ব্যবসার ক্ষেত্রে লাভের হিসাব
হ্যান্ডওয়াশ ব্যবসাতে (Hand Wash Making Business) অন্য ব্যবসার তুলনায় কম ইনভেস্টমেন্টে, বেশি লাভ পাওয়া যায়। বাজারে প্রচলিত দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দাম নির্ধারণ করতে হবে। প্রয়োজনে আপনাকে সামান্য কম দামে অর্থাৎ কম লাভ রেখে হ্যান্ডওয়াশ বিক্রি করতে হবে। তবে আপনি মার্কেটিং ভালো করতে পারবেন এবং কাস্টমার পাবেন অনেক।
এই ব্যবসাতে (Hand Wash Making Business) লাভের মার্জিন প্রায় 60-70 শতাংশ। ছোট স্তর থেকে যদি শুরু করেন তাহলেও প্রতি মাসে আপনি কম করে 40 থেকে 50 হাজার টাকা উপার্জন করতে পারবেন। বড় আকারের করলে, মেশিন কিনে আপনি খুব ভালোভাবেই হ্যান্ডওয়াশ (Hand Wash Making) তৈরি করে মার্কেটে সাপ্লাই দিতে পারেন। তাহলে এটা হাজার নয় প্রতিমাসে আপনি কয়েক লাখ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
Frequently Asked Questions
হ্যান্ডওয়াশ কি ?
ANS: হ্যান্ডওয়াশ চেনে না এমন কেউ আজকাল আছে বলে মনে হয় না । হাত ধোয়ার লিকুইড সাবানই হল হ্যান্ডওয়াশ ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসায় লাভ কেমন ?
ANS: কোনও ব্যবসাতেই প্রথমে লাভ ভালো হয় না । হ্যান্ডওয়াশের যথেষ্ট চাহিদা আছে । কাজেই উৎপন্ন মাল যতো বাজারজাত হবে ততোই লাভের মুখ দেখা যাবে । পন্যের গুনগত মান ঠিক রাখা প্রয়োজন । তবেই ব্যবসার প্রসার ও উন্নতি ঘটবে ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা করতে কেমন পুঁজি দরকার ?
ANS: আজকাল অল্প পুঁজি দিয়ে কোনও ব্যবসাই ভালো করে করা যায় না । সেই দিক থেকে বিচার করলে হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা সামান্য পুঁজি দিয়েই করা যেতে পারে । মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েই এই ব্যবসাটি শুরু করা যায় ।
কারা হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা করতে পারে ?
ANS: সবাই পারে । আপনি যদি বেকার হন, কিছু করার চাহিদা থাকে, আপনার যদি ইনকামের প্রয়োজন হয় তাহলে আপনিও হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা করতে পারেন ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা করতে কোনও ট্রেনিং এর প্রয়োজন আছে কি ?
ANS: এই ক্ষেত্রে আমি বলবো, আপনি যদি ব্যবসা করার মানসিকতা নিয়ে থাকেন, ব্যবসায় উন্নতি করতে চান তবে পরিকল্পনা মাফিক আপনাকে এগোতে হবে । এই ব্যবসা ট্রেনিং ছাড়াও করতে পারবেন, তবে আমি বলবো কিছু পয়সা খরচ করে একটা ট্রেনিং নেওয়া ভালো । তাতে আপনি লাভবানই হবেন ।
কিভাবে হ্যান্ডওয়াশের গুনগত মান বাড়ানো যায় ?
ANS: এটা সম্পূর্ণ ট্রেনিং এর ব্যাপার । ট্রেনিং এ আপনাকে সব শিখিয়ে দেওয়া হবে । আপনি সবসময় চেষ্টা করবেন আপনার পন্যের গুনগত মান বজায় রাখার । তাতে আপনার ব্যবসার উন্নতি তরান্বিত হবে ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসার মার্কেটিং কি ভাবে করা যাবে ?
ANS: মনে রাখবেন, মার্কেটিং কিন্তু ব্যবসার উন্নতি করার প্রধান চাবিকাঠি । মার্কেটিং ভালো করে করার জন্য বড় বড় কোম্পানিগুলি প্রচুর টাকা বিনিয়োগ করে । উপরে বর্ণিত উপায়ে আপনি ভালো ভাবে আপনার পন্যের মার্কেটিং করতে পারবেন ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসার চাহিদা কেমন ?
ANS: আজকাল মানুষ আগেকার মতো নেই । সবার জীবন যাত্রা বদলে গেছে । সবার লাইফস্টাইল আধুনিক হয়ে উঠেছে । তাই আধুনিক যুগের সকল পণ্যেরই চাহিদা বাড়তে থাকে । হ্যান্ডওয়াশের প্রচলন বর্তমানে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে । সুতরাং চাহিদা নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকবে না ।
গ্রাম বা শহর কোন জায়গায় হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা ভালো চলবে ?
ANS: গ্রামেও চলবে, শহরেও চলবে । তবে যেহেতু শহরে জনসংখ্যা অনেক বেশী, তাই গ্রামের তুলনায় শহরে ভালো চলবে ।
হ্যান্ডওয়াশ তৈরি সম্পর্কে আরও জানতে যোগাযোগের ঠিকানা চাই ।
ANS: এই ব্যবসাতে আপনার উন্নতির জন্য আগাম শুভেচ্ছা রইলো। আপনাদের সুবিধার্থে আরও বিশদে জানা বা ট্রেনিং এর জন নিচের নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেনঃ
1. সুপার আর্ট, সোনারপুর খিরিশতলা, ফোন- 9002886369 / 8335815276
আজ আমরা হ্যান্ডওয়াশ তৈরির ব্যবসা সম্পর্কে আলোচনা করলাম । লেখাটি পড়ে ভালো লাগলে লাইক করবেন, শেয়ার করবেন ও আমাদের ওয়েবসাইটকে সাবস্ক্রাইব করবেন । ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও ভালো ভালো ব্যবসার তথ্য পেতে আমাদের পেজে অবশ্যই ভিজিট করবেন । আমাদের তথ্য থেকে সমৃদ্ধ হয়ে ব্যবসা শুরু করুন, নিজের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করুন । ধন্যবাদ ।